কুমিল্লার দেবীদ্বরে স্কুল ছাত্রীর শ্লিলতা হানির অভিযোগে আটক প্রধান শিক্ষক মোঃ মোক্তল হোসেনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলায় ওই প্রধান শিক্ষককে জেলে পাঠানো হয়। অপরদিকে পুলিশের দায়ের করা মামলায় ২১০ আসামীর মধ্যে আটক ১৬ আসামীকে জেল হাজতে প্রেরক করা হয়। ২ মামলায় ২১১জন আসামী করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলে পুলিশের অব্যাহত অভিযানে এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যালয়ের আশে পাশের কয়েকটি গ্রাম পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়ায় শুক্রবার জুম্মার নামাজে মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি তেমন চুখে পড়েনি।
জানা যায়, ওই ঘটনায় বুধবার রাতেই আটক উপজেলার মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোক্তল হোসেনকে একমাত্র আসামী করে দেবীদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ছাত্রী বাবা। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধান শিক্ষক মো. মোকতল হোসেনকে কোর্টে মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এছাড়া পুলিশের উপর হামলা, পুলিশের কর্তব্য কাজে বাঁধা দানের ঘটনায় দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক মুক্তার আহমেদ মলি বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় আটক এজহারভ‚ক্ত ১০জনআসামীকে একই দিন জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। আটক আসামীরা হলেন- উপজেলার শাকতলা গ্রামের ডাঃ বশির আহাম্মেদ ভূইয়ার পুত্র লুৎফুর কবির ভূইয়া সোহাগ (৩১), আবুল কালাম আজাদ ভূইয়ার পুত্র মনিরুজ্জামান ভূইয়া প্রকাশ জামান ডাক্তার (৪৮), মোখলেছুর রহমানের পুত্র আলী আশ্রাফ (৪৭), মৃত শরবত আলীর পুত্র মোঃ ছবুর (১৯), মাশিকাড়া গ্রামের মোঃ সেলিমের পুত্র শাহ পরান (৩০), মৃত মুসলিম উদ্দিনের পুত্র মোঃ ওয়াজকুরুনী (৩৫), হামলা বাড়ীর মৃত আব্দুল হাকিমের পুত্র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৫০), পদ্মকোট গ্রামের মৃত জব্বার আলীর পুত্র মোঃ ইউনুছ (৩৬), আবুল কাশেম এর পুত্র মোঃ জিয়াউর রহমান (৩২), হোসেনপুর গ্রামের মৃত আকরম আলীর পুত্র আব্দুল কাদের (৫৫)কেও কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলে এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক কাটেনি।
শুক্রবার দুপুরে মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যলয়ে যেয়ে দেখা- বিদ্যালয়ের গেইটের সামনে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) খাদেমুল বাহার ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তল্লাসীর চৌকি বসিয়ে সিএনজি, অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস এবং পথচারিদের তল্লাসী করা হচ্ছে।
এসময় বিদ্যালয়ের ভেতরে অবস্থানরত ১০ নং গুনাইঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ উত্তর জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বিদ্যালয়ের পূর্বের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং নির্ভয়ে শিক্ষার্থীরা যেন শ্রেণী কক্ষে আসতে পারে এবং মাশিকাড়া বাজার ও পদ্মকোট বাজর চালু এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক দূর করতেই স্কুল কমিটি ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেছি।
শুক্রবার সকালে মাশিকাড়া ও শাকতলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৬ জন কে আটক করেন। আটককৃতরা হলেন, স্থানীয় ১০ নং গুনাইঘর (দঃ) ইউপি মেম্বর মমিনুল হক মুন্না(৪২), আ’লীগ নেতা আশেক এলাহী সুমন(২৭), এরশাদ চৌকিদারের মেয়ের জামাই আবুল হাসেম(৩২), ফয়সাল আহমেদ(২২), মামুন মিয়া(৪২) ও সোলেমান (২৪)। আটককৃতদের শুক্রবার বিকালে কোর্টে প্রেরক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেবীদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার।
এ ব্যপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, গত বুধবারের ঘটনায় যারা বিদ্যালয় ভাংচুর ও পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের আটক করা হচ্ছে। বৃহস্পতি ও ৬ জনকে আটক করে বিকেলে কোর্ট হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত।