দেবীদ্বার(কুমিল্লা)প্রতিনিধি
দেবীদ্বারে এক যুবককে চোরের অপবাদ দিয়ে মধ্যরাতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাত ২টায় উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের পূর্ব নবীপুর গ্রামের বাহার উদ্দিন সরকার বাড়িতে।
শুক্রবার বিকেলে ইউসুফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকারিয়া এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন-এ ঘটনায় বৃহস্পতিবারে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে উভয় পক্ষকে শান্তিরপূর্ন ভাবে মিল করে দেওয়া হয়।
এ দিকে স্থানীয় বর্তমান ইউপি সদস্য হাসান বলেন ঘটনায় যা ঘটেছে সালিশি বৈঠকে উভয় পক্ষকে মিল করে দেওয়া হয়েছে, তবে যাকে চোর বলে মারধর করা হয়েছে মো.( মামুন)কে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সৃত্রে জানা যায় উপজেলার নবীপুর গ্রামের বাহার উদ্দিন সরকার বাড়ির, মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মো.মামুন(৪০)কে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে বুধবার রাত ২টায় নিজ ঘর থেকে বশির মেম্বারের বাড়িতে তুলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রেখে রাত ভর শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। আহত মামুনের পরিবার ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট বিচার প্রার্থী হলে বৃহস্পতিবার বিকেলে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সালিসে বৈঠকে প্রমান ছাড়া একজন লোককে চুরির অপবাদে এভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি বলে বশির মেম্বারকে তার চিকিৎসা বাবদ ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দেয়ার কথা বলে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। রাত ১১ টায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) রাত ৯ টায় দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা অবস্থায় আহত মামুন জানান, আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি ও আমার ছেলে রাশেদ টাইলস এর কাজ করে। কাজ শেষে ঘরে এসে রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পরি। মেবাইল চুরির ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারবোনা। রাত ২টার দিকে বশির মেম্বার তার ছেলে রুবেল, মেহেদি এবং ভাতিজা শামীম, শরিফ ও তাদের অনুসারী ইয়াসিন,কাঠমিস্ত্রী রুবেলসহ আরো কয়েকজন আমার বাড়িতে এসে আমাকে চোর চোর বলে উচ্চস্বরে ডাকাডাকি শুরু করে। পরে আমি দরজা খুললে আমাকে টেনে হেচরে ঘরে থেকে বাহির করে নিয়ে যায়। বশির মেম্বারের বাড়িতে সারারাত আমগাছের সাথে বেঁধে রেখে লাঠিসোঁটা,প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে বেধরক মারধর করেন। সকাল হলে মেম্বারের বাড়িতে একটি ঘরে নিয়ে বেঁধে পাশবিক নির্যাতন করেন। আমি মোবাইল চুরি করেছি তা স্বীকার করার জন্য জুয়েল প্লাস দিয়ে আমার পায়ের নখ তুলে নেয়।
আহত মামুনের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম এতো রাতে আমার স্বামীকে ঘরে থেকে তুলে নিয়ে চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করলো,মেম্বার সারারাত সারাদিন বেধে রাখলো, আমারা আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। আমরা গরিব বলে কি কোনো বিচার নেই। আমার স্বামীকে বিনাদোষে চুরির অপবাদে রাতভর গাছের সাথে বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালায়, থানা পুলিশের আশ্রয় চাওয়া দুরের কথা,চিকিৎসা নিতেও দেয়নি। চেয়ারম্যানের সহযোগীতায় হাসপাতাল এনেছি। এবিষয়ে বশির মেম্বারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার বিকেলে থানা অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান- এ ঘটনা শুনেছি তবে উভয় পক্ষের কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।