দেবীদ্বার(কুমিল্লা) প্রতিনিধি
৫১ বছর পর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ২ মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যের নামে দেবীদ্বার থানা ক্যাম্পাসে দু’টি স্থাপনা উদ্ধোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই স্থাপনা দুটি উদ্বোধন করেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান (বিপিএম-বার)।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জনতা কর্তৃক দেবীদ্বার থানার অস্ত্রাগার সুন্ঠনের সুযোগ দেয়ায় পাকসেনাদের মানষিক ও শারেরীক নির্যাতনে মৃত্যুবরন করেন দেবীদ্বার থানার তৎকালিন অফিসার ইনচার্জ এস,এম, রকিবুল হক চেীধূরী। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয় দেবীদ্বার থানা পুলিশ সদস্যদের জন্য নির্মিত মেসটির নাম রাখা হয় ‘‘এস,এম, রকিবুল হক চেীধূরী মেস’’ এবং ২৫ মার্চ পাকসেনাদের হত্যাযজ্ঞে নিহত রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত পুলিশ সদস্য শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রোছমত আলীর নামে থানার গাড়ি রাখার গ্যারেজটির নামকরন করা হয় ‘‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রোছমত আলী গ্যারেজ” ।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামান(বিপিএম), দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজি চক্রবর্ত্তী, দেবীদ্বার এসএ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম, দেবীদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লাহ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুস সামাদ, সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ ভাইসচেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাসেম ওমানী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাজমুল হাসান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা গোলাম মাওলা, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম দিপক চন্দ্র সিংহ, দেবীদ্বার ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আলাউদ্দিন, দেবীদ্বার রেয়াজ উদ্দিন মডেল সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবুর আহমেদ, দেবীদ্বার মফিজ উদ্দিন আহমেদ মডেল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মুজিবুর রহমান এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, ১৯৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীনতা ঘোষণার মাত্র ৫দিনের মধ্যে ৩১ মার্চ ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সু-সজ্জিত ১৪ জন পাকসেনার একটি দল পায়ে হেটে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের প্রধান সেনা ছাউনি ময়নামতি ক্যান্টনম্যান্টে যাওয়ার পথে দেবীদ্বার এলাকায় জনতার হাতে অবরুদ্ধ হয়। ওই সময় পাক সেনাদের সাথে সম্মূখ লড়াইয়ে অংশ নিতে জনতা দেবীদ্বার থানার অস্ত্রাগার লুন্ঠন করে। ওই অস্ত্রাগার লুন্ঠনের সুযোগ দেয়ায় তৎকালীন দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ এস,এম,রকিবুল হক মজুমদার পাকসেনাদের শারেরীক ও মানষিক নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেন। সেদিন ১৪ পাক সেনাকে হত্যা করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে ৩৩ বাঙ্গালী শহীদ ও অর্ধশতাধিক বাঙ্গালী আহত হয়েছিলেন। ওই যুদ্ধটি ‘দেবীদ্বার ভিংলাবাড়ি- জাফরগঞ্জ শ্রীপুকুরপাড় জামে মসজিদ যুদ্ধ’ নামে ইতিহাসে ঠাই হয়।
অপর দিকে গাড়ি রাখার গ্যারেজ এর নামকরণ করা হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত পুলিশ সদস্য ২৫ মার্চ পাকসেনাদের হত্যাযজ্ঞে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রোছমত আলীর নামে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রোছমত আলী দেবীদ্বার উপজেলার বনকোট গ্রামের অধিবাসী ছিলেন।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান (বিপিএম-বার)বলেন, আমরা বিলম্ব হলেও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের মূল্যায়নে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছি। যা আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদান সম্পর্কে জানার সুযোগ হবে।